`সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, ফকির লালন বলে, জাতের কি রূপ দেখলাম না এই নজরে’
বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ সেই আধ্যাত্মিক পুরুষ, যিনি এই জাত-কুলের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে মানবতার গান গেয়েছেন। তাঁর মতে, মানুষ ছাড়া সব অন্ধকার।
‘মানুষ ভজলেই সোনার মানুষ হবি-এই বিশ্বাস লালনকারী গুরু শিষ্য আর ভক্তরা সমবেত আখড়াবাড়ি কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়। ‘পারে লয়ে যাও আমায়..’ আকুতিতে রোববার লালন তিরোধান দিবসে শুরু হচ্ছে ৩ দিনের সঙ্গীতানুষ্ঠান, আলোচনা ও লালন মেলা।
রাতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের লালন স্মরনোৎসব উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। সব প্রস্তুতি শেষে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কোনো এক চৈত্র্যের দোল পূর্ণিমায় কুষ্ঠ রোগী লালন কালী নদীতে ভেলায় ভাসতে কুষ্টিয়ার এই ছেউড়িয়ায় আসেন। গুরু সিরাজ সাঁইয়ের সঙ্গে ঘুরে জ্ঞান অর্জন করে বাউল সম্রাটে পরিণত হন তিনি।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক মানব ধর্ম প্রবর্তক উপ-মহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই সাধকের মৃত্যুর পর কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় আখড়া কমিটি ও লালন একাডেমির উদ্যোগে প্রতিবছর লালন স্মরনোৎসব হযে আসছে। লালন ফকিরের জাতহীন মানবধর্মে দীক্ষিত হয়ে তাঁর জীবন-কর্ম, ধর্ম-দর্শন, মরমী সঙ্গীত ও চিন্তা চেতনা থেকে শিক্ষা নিতে প্রতিবছরের মতো এবারও কয়েক দিন আগেই লালন ভক্ত, অনুসারীরা এখানে আসতে শুরু করেন।
তারা বলছেন, এখানে এলেই সহজ মানুষের দেখা মেলে। মেলে শান্তি ও সফলতা। লালন অনুসারী বলাই সাহ বলেন, ৩১ বছর ধরে প্রতি বছর ২ অনুষ্ঠানে আসছি। যতকাল বেঁচে থাকব এখানে আসবই। এখানে এলেই আত্মার শান্তি। মনের সুখ।
এরইমধ্যে বিশাল এই লালনমেলায় একতারা-দোতারাসহ হরেক পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রস্তুত হচ্ছে মূলমঞ্চ। আখড়াবাড়ি চত্বরজুড়ে সাধু আস্তানা। মুখে মুখে লালনের আধ্যাত্মিক গান।
জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি জহির রায়হান বলেন, বিশাল এই উৎসব নির্বিঘ্ন করতে পুরো আখড়াবাড়ি এলাকা এখন সিসিটিভি’র আওতায়। নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা
কে/এসজেড